এবার হয়তো ইডি সমাজসেবী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোটি টাকার সম্পত্তির হিসেবে পাবেন বলে মনে করছেন বিরোধী দলগুলো, CPIM র সাথেও কি সম্পর্ক তার দেখুন

কে এই কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়

কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাসিন্দা। এই বাড়িতেই থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর চতুর্থ ভাই সমীরের স্ত্রী। যিনি মূলত কার্তিক নামেই বেশি পরিচিত। তবে এটা ছাড়াও কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও একটি পরিচয় রয়েছে। CPIM নেত্রী ভারতী সেনগুপ্তের বড় মেয়ে তিনি। কাজরীর মা ভারতী সেনগুপ্ত ভবানীপুরের প্রবীণ সিপিএম নেত্রী। একটা সময়ে দলের লোকাল কমিটিরও সদস্যা ছিলেন। এখন নেতৃত্বে না থাকলেও দলের সদস্য।

কয়লা পাচার (Coal smuggling) মামলায় বালিগঞ্জের নির্মাণ সংস্থার অফিস থেকে কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ধাবার মালিক মনজিৎ সিং গ্রেওয়াল (Manjit Singh) ওরফে জিট্টা ভাইকে তলব করেছিল ইডি। এবার জিট্টা ভাইয়ের বয়ানে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জয়েন্ট প্রপার্টির কথা জানালেন জিট্টা ভাই৷

এর আগে জিট্টি ভাইয়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের যোগের কথা তুলে ধরা হচ্ছিল বিজেপির তরফে৷ একযোগে সরব হন শুভেন্দু-সুকান্তরা৷ এখন একেবারে সম্পত্তির কথা জিট্টি নিজেই উগরে দিতে আলোড়ন পড়ে গেছে।

কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের সময় নিজেকে সমাজসেবী হিসাবে বর্ণিত করে যে টাকার হিসাব দিয়েছিলেন তখনি বিরোধী দল এবং বাংলার মানুষের চোখ কপালে উঠে গিয়ে ছিল। শুধুমাত্র সমাজসেবা করে এতো টাকার অধিকারী কি করে হতে পারেন তিনি? উত্তর হয়তো এখন পাওয়া যাচ্ছে।

ভোটার সময় কমিশনে জমা করা হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৯ টাকা দেখানো হয়েছিল। কাজরীর দেওয়া হিসাব অনুয়ায়ী, তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ২ কোটি ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮৩ টাকা। আর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ১১৬ টাকা। পাশাপাশি, হলফনামায় আরও জানানো হয়েছে, কালীঘাট সংলগ্ন এলাকা, ওডিশা এবং বোলপুর মিলিয়ে কাজরীর ৯টি জমি রয়েছে। অর্থাৎ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার স্বামীর সঞ্চয়, জমি, ও হাতে থাকা নগদ মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা রয়েছে। আয়কর দফতরে পেশ করা ২০২০-২১ সালের রিটার্নে কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাৎসরিক আয় দেখানো হয়েছিল ২৫ লাখ ৭১ হাজার ৭১০ টাকা।

তবে এবার প্রশ্ন হলো নিজেকে সমাজসেবী হিসাবে দেখানো কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিপুল পরিমান টাকা কি কয়লা পাচারের সাথে যুক্ত? কারণ জিট্টা ভাই স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে যৌথ সম্পত্তি রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতৃবধূ তথা কলকাতা পুরনিগমের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

সুত্রের খবর, শেয়ার প্রতারণা থেকে শুরু করে আয়কর না জমা দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে জিট্টার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি কয়লা পাচারের টাকাও এই কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে আগেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা।