মিড ডে মিলের অর্থে বগটুই গণহত্যার ক্ষতিপূরণ, সত্য সামনে আনলেন শুভেন্দু অধিকারী

বীরভূমে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়া হয়েছে মিড ডে মিল খাতের টাকা থেকে। এতে অবশ্য বেআইনি কিছু দেখছে না বীরভূম জেলা প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, নিয়মের মধ্যে থেকেই সব হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে মিড ডে মিলের কোটি কোটি টাকা খরচ করার অভিযোগ আগেই এনেছিলেন বিরোধী দলনেতা৷ এবার আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, মিড ডে মিলের অর্থে বগটুই গণহত্যায় নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য৷ এভাবে এক খাতের টাকা অন্য খাতে ব্যয় করার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্য সচিব এবং বীরভূমের জেলাশাসকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকেও জানাচ্ছেন শুভেন্দু৷ শনিবারের সকালে নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে এমনই বিস্ফোরক দাবি সামনে এনেছেন তিনি৷ সত্যি কি আর্থিকভাবে রাজ্য দেউলিয়া? মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে কানাকড়িও নেই? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা৷

ত বছরের অগস্ট মাসে বীরভূমের রামপুরহাটে একটি দুর্ঘটনার পর অগস্টেই মৃতদের পরিবারবর্গ ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। দেখা যাচ্ছে, সেই টাকার একটি অংশ দেওয়া হয়েছে মিড ডে মিল খাত থেকে। প্রাপকদের ব্যাঙ্কের পাসবইতেও তার উল্লেখ রয়েছে।

গত বছরের ২১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বোমা মেরে খুন করা হয় বগটুই গ্রামের বাসিন্দা তথা বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমুল উপপ্রধান ভাদুকে। এর পর ওই রাতেই গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শাসকের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ঘটা ওই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে অকুস্থলে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেদিন অকুস্থল থেকেই নিহত এবং আহতদের পরিবারবর্গকে আর্থিক সাহায্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

সাধারণ ভাবে এই ধরণের ক্ষতিপূরণের টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল বা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে আসার কথা। সেই বিষয়ে জানতে চাওয়ায় বীরভূমের জেলাশাসক বলেন, ‘‘ত্রাণের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাময়িক ভাবে অন্য কোনও তহবিল থেকে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। মিড ডে মিল থেকে হয়েছে কি না জানি না।

বগটুই গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সেই আর্থিক সাহায্যের ভিডিও শনিবার সকালে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে আপলোড করে আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন শুভেন্দু৷ শ্লেষের সুরে লিখেছেন, ‘‘স্কুলছাত্রীদের খাদ্য ও পুষ্টির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার মিড ডে মিল তহবিলে অর্থ দেয়৷ সেই অর্থ ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে! এটা একটা আর্থিক অপরাধ।’

এই বিষয়টি কি ‘নিয়মবিরুদ্ধ’? না কি এমন করা যায়? এই প্রশ্নের জবাবে জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রয়োজন তো নিয়ম মানে না! কোনও বাড়িতেও যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তবে প্রথমেই তো ক্ষতিগ্রস্তের দিকে নজর দেওয়া হয়। সেটাই করা হয়েছে। তবে আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত, যে ফান্ড (তহবিল) থেকেই দেওয়া হোক, সেটা সাময়িক”।