চরমতম খারাপ অবস্থা শিক্ষা ক্ষেত্রে: পশ্চিমবঙ্গে ৭০১৮ টি প্রাথমিক স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে মমতা সরকার

গত দশ বছরে ৭০১৮ টি প্রাথমিক স্কুল স্রেফ বন্ধ হয়ে গেছে । বন্ধ হওয়ার কারণ শিক্ষক বিহীন অবস্থায় চলতে চলতে ছাত্র আসা বন্ধ হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই স্কুলগুলো আজ শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেছে।

পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রের চরমতম খারাপ অবস্থা দেখা গেছে। যেখানে গত দশ বছরে মমতা সরকার ৭০১৮টি রাজ্য-চালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, ৩১ মার্চ, ২০১২ পর্যন্ত, পশ্চিমবঙ্গে ৭৪,৭১৭ টি রাজ্য-চালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। ৩১ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত সংখ্যাটি ৬৭,৬৯৯ -এ নেমে এসেছে।

সর্বাধিক পতন রেকর্ড করা হয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলায় যেখানে এই দশ বছরে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা ১,১৯২ কমেছে।

এখন যা পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় বিভক্ত ৩১ মার্চ, ২০১২ পর্যন্ত, রাজ্য-চালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট সংখ্যা ছিল ৮,৪০৪ টি। ৩১ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত, সংখ্যাটি ১,০৪৭ কমে ৭,৩৫৭ এ দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৫,৪১১ টি পশ্চিম মেদিনীপুরে এবং ১,৯৪৬ ঝাড়গ্রামে।

গত দশ বছরে পূর্ব মেদিনীপুরের ৮৬৭টি স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১২ সালে, ৫,৬১৬ টি স্কুল ছিল, যা ২০২২ সালে ৪,৭৫২-এ নেমে এসেছে।

কিন্তু এত স্কুল বন্ধ কেন? বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি স্কুলের একজন শিক্ষক বলেন, “আমাদের স্কুলে স্থায়ী বাড়ি ছিল না। স্থানীয় একটি মন্দিরে স্কুল চলছিল। একসময় মন্দিরের সংস্কার কাজ শুরু হয়। তখন স্কুলটি স্থানীয় বাসিন্দার বাড়ি থেকে পরিচালিত হত। এরপর ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে থাকে। তখন স্কুল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।”

স্কুল ভবনের অভাবের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভাবই স্কুল বন্ধের প্রধান কারণ।

ক্ষমতাসীন টিএমসি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। সরকারের ভুল নীতির কারণে এমনটি হয়ে চলেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিকাঠামো নেই। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য কোনো বিষয়ভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক নেই। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত ঠিক নয়। যাদের মেধা নেই তাদের অবৈধভাবে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব কারণে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রতি অসন্তুষ্ট বিপুলসংখ্যক অভিভাবক। তারা মনে করে সরকারি স্কুলে গিয়ে কোনো লাভ নেই। এখন শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্য বা কাউন্সিলররা স্কুল চালান।