যোগ্য শিক্ষকরা রাস্তায়, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ভয়ঙ্করহারে ; শিক্ষার বেহাল অবস্থা বঙ্গে

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে গত বছরের তুলনায় প্রায় চার লক্ষ কমছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা৷ দেশের অন্যান্য রাজ্যে বাড়লেও বাংলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে গিয়েছে৷ করোনার মত মহামারীর প্রকোপেই কি এই পতন? প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষামহল।

কিন্তু করোনাকে পুরোপুরি দায়ী করা যায় না৷ কারণ, অন্যান্য রাজ্যে গত বারের তুলনায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় তেমন হেরফের ঘটেনি, বরং কোথাও কোথাও তা বেড়েছে৷

শিক্ষা দপ্তরের দাবী, করোনাকালে পড়াশোনা ছেড়েছে বহু ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা হ্রাসের এটাই নাকি একমাত্র কারণ৷ কিন্তু শুধু তো বাংলা নয়, করোনার করাল গ্রাসে পড়েছিল গোটা দেশ, তথা সারা বিশ্ব৷ অন্য রাজ্যগুলিতে পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কমেনি কেন?

শুধু মাত্র পশ্চিমবঙ্গেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছ।

ঝাড়খণ্ডেই এবছর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৭০ হাজার৷ গত বছরও প্রায় ৫ লক্ষের কিছু বেশি পড়ুয়া ঝাড়খন্ডে এই পরীক্ষা দিয়েছিল৷ ঝাড়খণ্ডের মতো প্রত্যন্ত এলাকা, যেখানে নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটের সমস্যা যথেষ্ট বেশি, সেখানে করোনারকালে কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে পরীক্ষার্থীরা?

ঝাড়খণ্ড অ্যাকাডেমি কাউন্সিলের খবর অনুযায়ী, গ্রামাঞ্চলে নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকলেও পড়ুয়ারা যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যায় তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিয়েছিল স্কুলগুলি৷ ২০২৩ সালে যারা মাধ্যমিক দেবে তাদের ওপর ছিল শিক্ষকদের আলাদা নজর৷ ফলে ঝাড়খণ্ডে ‘ড্রপ-আউট’ বা স্কুলছুটের সংখ্যা কমেছে উল্লেখ্যজনক ভাবে৷

বিহারের স্কুল এডুকেশন বোর্ড সূত্রে খবর, এ বার দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা দিচ্ছে ১৫ লক্ষেরও বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী৷ সেরাজ্যেও এবছর বেড়েছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা৷

দেশের অন্যান্য রাজ্যে বাড়লেও বাংলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কেন কমে গেলো ?

শিক্ষা মহলের ধারণা বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলোতে পড়াশুনোর মান তলানিতে এসে ঠেকেছে, ভালো শিক্ষক নেই। যোগ্য শিক্ষকরা তো চাকরি পায়নি, ভালো পড়াবে কে? তাই বেশিরভাগ অভিভাবক ইংরেজিই মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাচ্ছাদের নিয়ে চলে যাচ্ছ।

করোনারকালে স্কুলগুলোতে শিক্ষকরা ছাত্র ছাত্রীদের ওপর কোনো নজরদারি দেয়ন। শিক্ষকদের আলাদা কোনো নজর ছিল ন। যারা করোনারকালে
স্কুল ছেড়ে দিয়েছিলো , তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার কোনো ব্যবস্থাই করে ন।

শিক্ষক শিবিরের একটি বড় অংশের দাবী, যথাযথ নজরদারির অভাবে এ রাজ্যে অনেকটাই বেড়েছে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা৷ একারণেও কমছে মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা৷