পশ্চিমবঙ্গের ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে চিন্তিত তৃণমূল নেতৃবৃন্দ

গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি প্রেস কনফারেন্সর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে চিন্তিত দেখালো শশী পাঁজা এবং কুনাল ঘোষ সহ তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে, মূল অভিযোগের তীর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে যে তিনি নাকি ভাইপোর পিতৃ পরিচয় তুলে কথা বলেছেন।
এটা বঙ্গবাসী ভাবতে পারছেন?

বিগত দশ বছরে পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলের নেতাদের কিভাবে আক্রমণ করা হয়েছে দেখুন:

২০২১ শুভেন্দু বাবু বিজেপিতে যখন যোগদান করেন তখন এই তৃণমূলীরা বলতে শুরু করে “চোর চোর চোরটা, শিশির বাবুর ছেলেটা”। এক ই সময়ে নির্বাচনী মঞ্চ থেকে শুভেন্দু বাবুকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলে “তোর বাপ কে বল” বা “এক বাপের ব্যাটা হলে” ইত্যাদি কুরুচিকর কথা।
উপরোক্ত কথাগুলি বলে যখন বাঙালির মাথা লজ্জায় হেঁট করে দিয়েছিলেন সেইসময় আপনাদের সংস্কৃতি বোধ কোথায় ছিল?

নির্মলা সীতারমণকে ‘কালনাগিনী’ বলেছিলো তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রী কে কটাক্ষ করে এই তৃণমূলীরা বলেছিলো যে নিজের বৌ সামলাতে পারেনা সে দেশ সামলাবে কি করে? মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন কে তুই হরিদাস পাল, তোকে নাকে দড়ি পরে ঘোরাবো …..।
৩. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল হোঁদল কুতকুত।

কুনাল ঘোষ নবান্ন অভিযানের পরে শুভেন্দু অধিকারীকে সমকামী বলে আক্রমণ করেছিলেন। সাথে অভিষেকও ছিলেন।

শুভেন্দু অধিকারী বাংলা মায়েদের অপমান করেছেন এই বলে একটা হওয়া তোলার চেষ্টা করলেন শশী পাঁজা। তাহলে একটু দেখুন মমতা কি ভাবে মা জাতিকে অপমান করেছেন, “শরীর থাকলে যেমন সর্দি কাশি হয় তেমন রেপ ও হয়” কথাটি যখন আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তখন কি আপনার আমার মায়ের অপমান হয়নি?
অন্যায় ভাবে বদলির প্রতিবাদে যখন শিক্ষিকারা নবান্নের সামনে বিষ খেয়েছিলো সেইদিন বাংলার মেয়েদের অপমান হয়নি?

পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণের পরে যখন আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন সাজানো ঘটনা তখন কি মায়েদের সন্মান ধুলুন্ঠিত হয় নি?

বামেদের ৩৪ বছরের ভাষা সন্ত্রাস আমরা ভুলিনি। দুর্ভাগ্য এটাই যে সেই একই সংস্কৃতিকে আমাদের ওপর চালিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। জ্যোতি বাবু যে সব কলকারখানাতে তালা ঝুলিয়েছিলেন, আজ সেগুলোও ঝুলছে তারসাথে আপনি আরো ঝোলালেন।

বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূল যে ভাবে অশিক্ষিতদের প্রবেশ ঘটিয়েছে, তার ফলেই বাংলার রাজনীতির এই দুর্দশা। এই বিলো দ্য বেল্ট অ্যাটাক অত্যন্ত নিন্দাজনক। সম্মানীয় বিরোধী দলনেতাকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথাগুলো বলেছেন এবং এখন কুণাল ঘোষ বলছেন, তা তাঁদের শিক্ষাদীক্ষা, সংস্কৃতি এবং রুচি প্রমাণ করে।

শুভেন্দু বাবুকে যে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছিল তার প্রত্যুত্তরে তিনি যা বলেছেন তা শুনে যদি তৃণমূলীদের সংস্কৃতি বোধ নিয়ে যদি লজ্জিত হন তাহলে শুভেন্দু অধিকারীকে সহস্র প্রণাম বঙ্গবাসীর।

৩.

কুনাল ঘোষ বললেন এই সংস্কৃতি নাকি বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে এনেছে। তা বাবুমশাই, আরামবাগের বাম সাংসদ বিরোধী দলনেত্রীকে কি বলেছিলেন ভুলে গেলেন? আর অতো দূর না গিয়ে নবান্ন অভিযানের পরে আপনি নিজে শুভেন্দু বাবুকে কি ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন? ওনাকে আক্রমণ করতে গিয়ে সমকামী মানুষদের কেও আপনি ছোট করেছেন। আপনার বলা কথা যদি বিজেপির কোন নেতা বলতো তাহলে হয়তো প্রেসিডেন্সি বা যাদবপুরের রাস্তায় “হোক চুম্বন” এর আয়োজন করতো বামপন্থীরা। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে আপনারাই তাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন তাই মার্ক্সবাদের শ্রেণীশত্রু বিজেপিকে ঠেকাতে বামেদের এই আনুগত্যতা একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়।